প্রত্যয় নিউজডেস্ক: কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে কক্সবাজারের সদর উপজেলার পিএমখালী ও বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম র্যাব-৭ এর একটি দল। গ্রেফতারদের কক্সবাজার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উদ্ধার ওই কিশোরীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনির উল গিয়াস।
গ্রেফতাররা হলেন- কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া চেয়ারম্যানপাড়ার আবদুল গনির ছেলে শাহাব উদ্দীন, তার সহযোগী পেকুয়া উজানটিয়ার আরমান হোসেন, খরুস্কুল হাটখোলাপাড়ার নুরুল আলম ও পেঁচারঘোনার লোকমান।
কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীর জুমছড়ির এক টমটম চালকের কিশোরী মেয়েকে দেড় মাস ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে গত ১১ অক্টোবর ৯৯৯ নম্বররে কল করে সহায়তা চান ওই কিশোরীর মা। ৩৫ হাজার টাকা ধার দেয়ার পর যথাসময়ে ফেরত না পাওয়ায় টাকার পরিবর্তে টমটম চালকের মেয়েকে জোরপূর্বক আটকে রেখে ধর্ষণ এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। কক্সবাজার মডেল থানা পুলিশ সেদিন দুপুরে ওই কিশোরীকে উদ্ধারে অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হয়। পরে র্যাব-৭ ওই কিশোরীকে উদ্ধারে মাঠে নামে।
ওই কিশোরীর মা জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী পশ্চিম জুমছড়ির ওই টমটম চালকের সঙ্গে খরুলিয়া চেয়ারম্যানপাড়ার আব্দুল গনির ছেলে শাহাবুদ্দিনের টমটম চালাতে গিয়ে সম্পর্ক হয়। সেই সুবাদে শাহাবুদ্দিন তাদের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন। ওই কিশোরীর বাবার টাকার প্রয়োজন পড়ায় টমটম চালক শাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ধার নেন তিনি। টানাপোড়নের সংসারে তিনি সেই টাকা পরিশোধ করতে পারেননি।
এই সুযোগে শাহাবুদ্দিন তার কিশোরী মেয়েক জোরপূর্বক লোকজন নিয়ে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান। টাকা ফেরত না দিলে মেয়েকে আর ফেরত দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। পরে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য স্থানীয় মেম্বার ও খরুলিয়ার মেম্বার আবদুর রশীদের কাছে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেন ওই কিশোরীর মা। তাতেও মেয়েকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে মেয়েকে উদ্ধারের আকুতি জানান তার মা।
বিষয়টি কক্সবাজার মডেল থানাকে অবগত করা হলে কক্সবাজার মডেল থানার এসআই মনসুরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ খরুলিয়া চেয়ারম্যানপাড়ায় টমটম চালক শাহাবুদ্দিনের বাড়িতে ১১ অক্টোবর অভিযান চালায়। অভিযানের খবর আগে থেকে জেনে যাওয়ায় শাহাবুদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন ওই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান। পরে চট্টগ্রাম র্যাব-৭ এর একটি দল গত ১৫ অক্টোবর অভিযান চালিয়ে শাহাবুদ্দিন ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করে।
খরুলিয়ার মেম্বার আব্দুর রশিদ জানান, টমটম চালক শাহাবুদ্দিন এর আগেও নারী সংক্রান্ত ঘটনা ঘটিয়েছেন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনির উল গিয়াস জানান, গ্রেফতারদের শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।